যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশে করোনা ও বন্যায় বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘সেভ সিলেট’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ১৫০ দিনে দেড় লাখ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে তারা মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।
দীর্ঘ ৫ মাস ধরে করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের গরিব অসহায় মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন। এতে অনেকেরই ঘরে দেখা দিয়েছে খাবারের অভাব। অনেকেই একবেলা খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। অসহায় মানুষের মুখে একটু হাসি ফুটানোর জন্য মাঠে নামে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ‘সেভ সিলেট’।
করোনাভাইরাসের এই কঠিন মুহূর্তে নিজেদের জীবন বাজি রেখে শহরের অলি-গলি থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। সিলেট বিভাগের ৪০টি উপজেলায় তারা এখন পর্যন্ত ৯৩২টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। অসহায় মানুষ যাতে দু-বেলা পেট ভরে খাবার খেতে পারে, সে জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে দুই হাজারের বেশি সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবী।
সেভ সিলেটের যাত্রা গত ২৬ মার্চ। সেভ সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা আয়ান হক। যুক্তরাষ্ট্রে ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসীদের নিয়ে প্রথম এই প্ল্যাটফর্ম শুরু করেন। উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিউইয়র্কপ্রবাসী বিজ্ঞানী রফিক উদ্দিন আহমদ এবং অন্য উপদেষ্টারা মিলে সিদ্ধান্ত নেন, দুর্যোগের এই সময়ে খাবার প্যাকেট করে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার। খাদ্যসামগ্রী প্রদান, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয় সেভ সিলেট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তাদের ১৫০ দিনের একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ লাখ অসহায় মানুষের মধ্যে খাবার পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্য সেভ সিলেট সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
এ ব্যাপারে সেভ সিলেটের ফাউন্ডার ও সিইও আয়ান হক বলেন, ১৫০ দিনে সেভ সিলেট পরিবার মোট ১ লাখ ১ হাজার ৩৮৪ জনের কাছে খাবার বিতরণের মাধ্যমে ‘এক লাখ অসহায় মানুষের জন্য খাবার’ মিশন সফলভাবে শেষ করেছে। ২ হাজার ১১৭ জন অ্যাকটিভ ভলান্টিয়ার ও এক লাখ মানুষের পরিবার হচ্ছে সেভ সিলেট। এই ৫ মাসে ৩৬টি দেশ থেকে ১ হাজার ৭৪৮ জন দাতার দানের টাকায় আমরা এই এক লাখ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে সক্ষম হই।
এ ব্যাপারে সেভ সিলেটের ফাউন্ডার ও সিইও আয়ান হক বলেন, ১৫০ দিনে সেভ সিলেট পরিবার মোট ১ লাখ ১ হাজার ৩৮৪ জনের কাছে খাবার বিতরণের মাধ্যমে ‘এক লাখ অসহায় মানুষের জন্য খাবার’ মিশন সফলভাবে শেষ করেছে। ২ হাজার ১১৭ জন অ্যাকটিভ ভলান্টিয়ার ও এক লাখ মানুষের পরিবার হচ্ছে সেভ সিলেট। এই ৫ মাসে ৩৬টি দেশ থেকে ১ হাজার ৭৪৮ জন দাতার দানের টাকায় আমরা এই এক লাখ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে সক্ষম হই।
আয়ান বলেন, ১৩৬টি গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা দল রয়েছে। পরবর্তীতে সেভ সিলেটের আরও তিনটি মিশন রয়েছে।
সেগুলো হলো—
১. এক লাখ তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে কারিগরি ট্রেনিং, ভাষা শিক্ষা, লাইফ স্কিল, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও প্রয়োজনীয় সব ট্রেনিং দেওয়া। তাই সেভ সিলেট ট্রেনিং সেন্টার চালু করা হয়েছে।
সেই ১ লাখ তরুণ-তরুণীকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করা হবে। যাতে সিলেট বিভাগের বেকারত্ব সমস্যা পুরোপুরি দূর হয়ে যায়। এ জন্য আমরা আলাদা প্ল্যাটফর্মও তৈরির কাজ করছি।
২. আগামী ১০ বছরে আমরা ৩০ লাখ গাছ লাগাব, এই কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। যেহেতু প্রথম বছর, তাই আগামী এক বছরে এক লাখ গাছ লাগানো হবে, যা প্রতি বছর বাড়বে ও ১০ বছরে ৩০ লাখ গাছ লাগানো।
৩. সেভ সিলেট পরিবার ভবিষ্যতের জন্য ২৬৩টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এগুলো শেষ হলে সিলেট বিভাগের অনেক সমস্যার সমাধান হবে।