মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশেষে দেয়ালের লেখা পড়তে পারছেন। টুইটার ও ফেসবুকে এখনো জারিজুরি করলেও সময় যে তাঁর শেষ, সে উপলব্ধিতে তিনি পৌঁছে গেছেন। হোয়াইট হাউসের এক সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ কথা জানিয়েছে।
অ্যারিজোনা ও উইসকনসিনের ভোট জো বাইডেনের পক্ষে প্রত্যয়নের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো আশাই আর অবশিষ্ট নেই। ভোটের ফলাফলকে বিতর্কিত করতে তাঁর প্রয়াস সফল হয়নি। ট্রাম্পের আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে যুক্ত এক উপদেষ্টা সিএনএনকে বলেছেন, ট্রাম্প এখন উপলব্ধি করতে পারছেন যে, তিনি সত্যি হেরে গেছেন।
দেয়ালের লেখা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। উইসকনসিন কেন, একটি অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফলও তিনি পাল্টাতে সক্ষম হননি। মুখে বারবার বলেছেন, ‘জালিয়াতি হয়েছে।’ যদিও জালিয়াতি ও কারচুপির পক্ষে কোনো প্রমাণ কোথাও দেখাতে পারেননি। একের পর এক আইনি লড়াইয়ে হেরে গিয়ে শেষে বলেছেন, কোনো বিচারক তাঁর অভিযোগ শুনতে রাজি হচ্ছেন না।
নিজের প্রেসিডেন্ট পরিচয়কে সামনে এনে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘এ কোন ধরনের বিচারক? এ কেমন আদালত, যারা প্রেসিডেন্টের কথাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না?’
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টারাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএনকে বলেছেন, তাঁরাও মনে করেন নির্বাচনের ফলাফল ঘুরিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ ও সম্ভাবনা এখন আর ট্রাম্পের নেই।
৩ নভেম্বর নির্বাচনের পরদিনই পরিষ্কার হয়ে ওঠে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জয় লাভ করছেন। ৭ নভেম্বর বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে ভোট প্রত্যয়ন করা একটা নিয়মিত কাগুজে কাজ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কাজকেই বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছেন নানাভাবে।
উইসকনসিন, অ্যারিজোনা, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও জর্জিয়া এরই মধ্যে তাদের নির্বাচনের ফল প্রত্যয়ন করেছে। অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরেরা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অ্যারিজোনার রিপাবলিকান গভর্নর ডাগ ডুসি রাজ্যের নির্বাচন পদ্ধতির প্রশংসা করে ভোট প্রত্যয়নে স্বাক্ষর করেছেন। বাহক মারফত এ প্রত্যয়ন পাঠানোর উল্লেখ করে গভর্নর ডাগ ডুসি হোয়াইট হাউসের সুষ্ঠু পালাবদল কামনা করেছেন।
এর পরপরই গভর্নর ডাগ ডুসিকে আক্রমণ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেছেন। দ্রুততার সঙ্গে ভোট প্রত্যয়ন করে একজন ডেমোক্র্যাটকে ক্ষমতায় বসাতে এমন তাড়াহুড়া কেন, সে প্রশ্ন রেখেছেন ট্রাম্প। একের পর এক টুইটে ট্রাম্প এমন অভিযোগ করছেন জর্জিয়ার রিপাবলিকান গভর্নর ব্রায়ান কেম্পকে নিয়েও।
ফক্স নিউজ তাদের এক পৃথক প্রতিবেদনে বলেছে, ট্রাম্প এখন উপদেষ্টাদের সঙ্গে ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবার প্রার্থী হতে পারবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সমর্থকেরাও বলতে শুরু করেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে লড়বেন, তার আগাম ঘোষণা সহসাই আসতে পারে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ অন্তত আশা করে নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে গেছেন—এ কথা স্বীকার করে বিজয়ী প্রার্থীকে তিনি অভিনন্দন জানান। তবে এমন কিছু তিনি করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন।